Sunday, June 10, 2012

বাজেটে ব্যাংক ঋণের লক্ষ্যমাত্রায় রফতানি বিপর্যের আশংকা এক্সপোর্টার্স ফোরামের সংবাদ সমম্মেলন

অর্থনীতি প্রতিবেদক : আগামী অর্থ বছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক থেকে ২৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিলে তা দেশের রফতানি বণিজ্যে বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে রপ্তানিকারকদের সংগঠন এক্সপোর্টার্স অ্যাসোশিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইএবি)। সেই সাথে সরকারের এ ঋণ গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাংক ঋণের সুদ আরো বাড়ার শঙ্কাও প্রকাশ করেছেন রপ্তানিকারকরা।
গতকাল ইএবি রাজধানীর একটি হোটেলে প্রস্তাবিত ২০১২-১৩ অর্থবছরের বাজেট এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ইএবি প্রেসিডেন্ট সালাম মোর্শদী বলেন, সরকার প্রস্তাবিত বাজেটে জাতীয় প্রবৃদ্ধি (জিডিপি) লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৭.২ শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতি ৭.৫ শতাংশে নামিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে। কিš‘ সরকার ব্যাংকের প্রতি নির্ভরশীলতা না কমালে নির্ধারিত জিডিপি অর্জন অসম্ভব নয়। তিনি বলেন, সরকার তার প্রয়োজনে ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারে। কিš‘ এজন্য যেন দেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ঋণ পেতে সমস্যা নয় হয়। এজন্য তিনি সরকারকে শিল্প খাতের জন্য আলাদা ঋণ-কাঠামো তৈরির প্রস্তাব করেন।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনরে প্রেসিডেন্ট জাহাঙ্গীর আলামীন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সরকার প্রস্তাবিত ২০১২-১৩ অর্থবছরে ২০১১-১২ অর্থবছরের তুলনায় বেশি ব্যাংক ঋণ গ্রহনের পরিকল্পনা নিয়েছে। ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ গ্রহনের নেতিবাচক প্রভাব ইতোমধ্যেই প্রতিফলিত হয়েছে। ব্যাংকগুলো ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রয়োজনীয় অর্থের ঋণ দিতে পারছে না। ফলে দেশেল রফতানি আয় করেছে এবং লক্ষ্য মাত্রার প্রায় ৮ শতাংশ কর রফতানি হয়েছে। সরকার ২০১২-১৩ অর্থবছরে যে পরিমাণ ব্যাংকঋণ গ্রহনের উদ্যোগ নিয়েছে তা নিয়ন্ত্রন করতে না পারলে ভবিষ্যৎ ও রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হবে না বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপ¯ি’ত বিকেএমইএ ২য় ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতিম বলেন, বর্তমানে ব্যাংক থেকে ঋণ পেতে যে হারে সুদ প্রদান করতে হ”েছ তাতে শিল্পের উৎপাদন খরচ বেড়ে যা”েছ। মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে টিকে থাকতে হলে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে টিকতে হ”েছ। কিš‘ আমাদের প্রতিবেশি ও প্রতিযোগী দেশগুলোতে বর্তমানে সিঙ্গেল ডিজিটে ঋণের সুদের হার বিদ্যমান। ফলে তাদের পণ্যের দামের তুলনায় আমাদের পণ্যের দাম বেড়ে যা”েছ। ব্যাংক ঋণের সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করেন তিনি। 
ইএবি প্রেসিডেন্ট লিখিত বক্তব্যে বলেন, দেশের অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি রফতানি শিল্পের সব পণ্যের জন্য প্রস্তাবিত ১.২০ শতাংশ উৎসে কর নির্ধারণ করায় এ শিল্প নতুন করে চ্যালেঞ্জের সম্মুখিন হবে। রফতানি প্রবৃদ্ধি অর্জনে সরকারকে ১.২০ শতাংশ উৎসে করের পরিবর্তে পূর্বের ০.৬০ শতাংশ উৎসে কর পুনবহাল রাখার আহবান জানান।
তিনি বাজেটে সব ধরনের রফতানিমুখী শিল্প খাতের জন্য সব ব্যাংকের এক ও অভিন্ন ডলার বিনিময় হার নির্ধারনের সুপারিশ করেন। একই সঙ্গে রফতানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে প্রদেয় নগদ সহায়তার ওপর আরোপিত ৫ শতাংশ সুদ মওকুফের দাবি জানান।
প্রস্তাবিত বাজেটে মানবসম্পদ উন্নয়ন, কর্মসং¯’ান সৃষ্টির লক্ষ্যে আলাদা বরাদ্দ, পুঁজিবাজারের জন্য বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা, কারওয়ান বাজারের জনতা টাওয়ারকে সফটওয়্যার পার্ক করার ঘোষণা, রফতানিমুখী শিল্পের মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি ও পরিবেশ রক্ষায় ইটিপি ¯’াপনে আমদানিকৃত যন্ত্রপাতিতে শূন্য শূল্ক আরোপ করায় এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সরকাকে অভিনন্দন জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপ¯ি’ত ছিলেন, বিজিএমইএ ভাইস প্রেসিডেন্ট এম এ সিদ্দুকর রহমান, ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক এম খলিলুল্লাহসহ বিভিন্ন রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ।

No comments: