আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কালো টাকা বৈধ করার সুযোগ রাখায় প্রতিবাদ জানিয়ে অনতিবিলম্বে সংবিধান ও নির্বাচনী অঙ্গীকারের পরিপন্থী এ প্রস্তাব প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
গতকাল 7 june বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে প্রদত্ত বর্তমান সরকারের ৪র্থ এ বাজেট প্রস্তাবের ওপর প্রতিক্রিয়ায় টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, আসন্ন অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে আয়কর আইন সংশোধন করে কালো টাকাকে বৈধ করার যে প্রবিধানের প্রস্তাব করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক, অনৈতিক ও বৈষম্যমূলক। এর ফলে অবৈধ উপার্জনকারী ও কর ফাঁকিদাতাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বদলে পুরস্কৃত করা হচ্ছে। অন্যদিকে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন বৈধ ও সৎ উপায়ে উপার্জনকারী করদাতারা।
টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক বলেন, কালো টাকা সাদা করার প্রস্তাব করে সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকারের এ সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন কালো টাকার মালিকদের অনৈতিক চাপের কাছে সরকারের অসহায় আত্মসমর্পণ ও রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের দৃষ্টান্ত।’ ।
এক বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, সংবিধানের ২০(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী অনুপার্জিত আয়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের দৃঢ় অবস্থান বর্ণিত রয়েছে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন জোটের প্রধান দলের নির্বাচনী অঙ্গীকারে কালো টাকা ও অবৈধ আয়ের বিরুদ্ধে অবস্থান ঘোষিত হলেও এরূপ অসাংবিধানিক সিদ্ধান্ত সরকারের কথিত দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান ও সুশাসনের অঙ্গীকারের পরিপন্থী এবং বিশেষ করে মাত্র দেড় বছর পর আসন্ন নির্বাচনের প্রেক্ষিতে আত্মঘাতীমূলক।
তিনি বলেন, সরকার একদিকে রাজস্ব আয় বৃদ্ধির জন্য মরিয়া, অন্যদিকে রাজস্ব ফাঁকির সুযোগকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার সিদ্ধান্ত শুধু আত্ম-প্রবঞ্চনাই নয়, সরকার কাঠামো দুর্নীতির ক্রমবর্ধমান নিয়ন্ত্রকেরও বহি:প্রকাশ।
টিআইবি আরো বলেছে, ইতিপূর্বে প্রতি বছর শেয়ারবাজারসহ চিহ্নিত খাতে কালো টাকা বিনিয়োগ বন্ধসহ সার্বিকভাবে কালো টাকা বৈধকরণের প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে টিআইবি। সরকার তা অবজ্ঞা করে প্রতি বছর এ সুযোগ সৃষ্টি করে শুধুমাত্র একটি বিশেষ প্রভাবশালী শ্রেণীকে পুরষ্কৃত করে দেশে দুর্নীতির সুযোগ সম্প্রসারণ করেই চলেছে। এর ফলে প্রকৃত রাজস্ব আয় বৃদ্ধি দুরে থাক, সমাজে ও রাষ্ট্র কাঠামোতে নৈতিকতার স্খলন ঘটছে।
No comments:
Post a Comment