Wednesday, May 29, 2013

দেশীয় পন্যের স্বত্ব রক্ষায় জেল ও জরিমানা
বিধান রেখে নতুন আইন হচ্ছে


সাখাওয়াত হোসেন
দেশীয় পণ্যের স্বত্ব রক্ষার জন্য তৈরি করা হচ্ছে নতুন একটি আইন। এই আইন তৈরির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশে যে সব পন্য ঐতিহ্য হিসাবে পরিচিত সেগুলোর স্বত্ব যেন ভিন্ন কোনো দেশ দাবি করতে না পারে। ভৌগোলিক নির্দেশক নামের এই আইনের ব্যত্যয় হলে জেল জরিমানা হবে। অর্থাৎ কেউ যদি এই আইন অমান্য করে তা হলে তার জন্য সর্বোচ্চ চার বছরের জেল ও তিন লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হচ্ছে। খুব শিগগির এই আইনটি মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এর আগে এই আইনটির সম্পর্কে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হয়েছে। খসড়া এই আইনটি মতামতের ভিত্তিতে চূড়ান্ত করা হবে। 


জানা গেছে, ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য উৎপাদনকারী ব্যক্তি বা তাদের স্বার্থের প্রতিনিধিত্বকারী কোন সমিতি, সংগঠন বা কর্তৃপক্ষ ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য নিবন্ধনের জন্য নির্ধারিত ফরমে রেজিষ্ট্রার নিকট আবেদন করবেন। একই সঙ্গে কোন ব্যাক্তি বা ব্যক্তি সমষ্টি যারা নিজেদের উৎপাদনকারী হিসাবে দাবি করেন তারাও এই আইনের মাধ্যমে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। রেজিষ্ট্রারের বরাবর আবেদনের দিন থেকেই তা আবেদনকারীর স্বত্ব হিসাবে প্রতীয়মান হবে। এবং সংশ্লিষ্ট সব আইন পরিপালনের পর  নিবন্ধনকারীর আবেদন পরীক্ষার পর রেজিষ্ট্রার সন্তুষ্ট হলে নির্ধারিত পদ্ধতিতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।
প্রস্তাবিত এই আইনের বিজ্ঞপ্তি প্রচারের তারিখ থেকে দুই মাসের মধ্যে কেউ রেজিষ্ট্রারের বরাবর ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য নিবন্ধনে বিরোধিতা করলে নির্ধারিত পদ্ধতিতে নোটিশ করতে পারবে। এছাড়াও কোনো আপত্তি না বিরোধিতা না পাওয়া গেলে রেজিষ্ট্রার ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসাবে সেই পন্যকে নিবন্ধন করবেন। একই সঙ্গে সেই পণ্যের সার্টিফিকেট প্রদান করবেন। প্রস্তাবিত এই আইনের অধীনে যতদিন সেই পন্য বাতিল বা অন্যভাবে অবৈধ না হবে ততদিন পর্যন্ত তা ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসাবে নিবন্ধন বৈধ থাকবে। কোনো ব্যাক্তি নির্দিষ্ট কোন পণ্যে জিআই সদন প্রাপ্ত হওয়ার পর তা মৃত্যু হলে তাহার বৈধ উত্তাধিকারীর সেই সনদের মালিকানা পাবেন।
নিবন্ধন বাতিলের ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত আইনে ভৌগোলিক অঞ্চলের সঙ্গে ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের মিল না থাকলে কিংবা পণ্যটি ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) আইন ২০১৩ অধীনে ভৌগোলিক নির্দেশকের বৈশিষ্ট পুরন না হলে তা নিবন্ধন বাতিল করা হবে।
প্রস্তাবিত আইনে রেজিষ্টারের ক্ষমতা সম্পর্কে বলা হয়েছে, রেজিষ্ট্রার আবেদনপত্র গ্রহন, বাতিল, পরিমার্জন এবং যুক্তিসঙ্গত কারণে নিজ সিদ্ধান্ত পুনবিবেচনার করতে পারবেন। এর পাশাপাশি পণ্যের কোনো স্বত্ব নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হলে সাক্ষী হাজিরের জন্য নোটিশ দেয়া হবে। এছাড়াও আনুষাঙ্গিক দলিল উদ্ধার ও দলিল উপস্থাপনের নির্দেশ দেয়া হবে। তবে কার্যক্রম পরিচালনায় বিভিন্ন পক্ষকে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা ব্যয় বহন করতে হবে। কোনো বিরোধী নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে রেজিষ্ট্রার তার নিজ ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে শুনানী গ্রহন করবেন একই সঙ্গে তা নিষ্পত্তি করতে পারবেন।
প্রস্তাবিত আইনে আইন যদি প্রমাণিত হয় তা ভিন্ন কোনো স্থানের বা বাংলাদেশে আঞ্চলিক সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই তবে এই আইনের লংঘন হিসাবে বিবেচিত হবে। আর তা যদি প্রমান হয় তাহলে এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ চার বছর এবং তিন লাখ টাকার অর্থ দন্ড করা হবে।

No comments: